আস্সালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ।
সকল প্রশংসা একমাত্র মহান আল্লাহর জন্য নিবেদিত, যিনি জগৎসমূহের প্রতিপালক। সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক তাঁর প্রিয়তম বান্দা ও সর্বশেষ নবী ও রাসূল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এঁর উপর। মহান আল্লাহ্র অপরিসীম দয়া ও রহমতে চট্টগ্রাম তথা সমগ্র বাংলাদেশের মধ্যে একমাত্র সহীহ্ আক্বীদাহ্ ভিত্তিক ফাউন্ডেশন হিসেবে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত ও রেজিষ্ট্রিকৃত (রেজি: নং- CHS-684/2022) “সহীহ্ আক্বীদাহ্ ইসলামিক ফাউন্ডেশন” প্রতিষ্ঠা সাল ২০২২ ইং হতে ফাউন্ডেশনের নিজস্ব ভবনে মসজিদ ও মাদ্রাসার কার্যক্রম শুরু করেছে। অত্র ফাউন্ডেশন এবং ফাউন্ডেশনের অধীনে পরিচালিত প্রতিষ্ঠান সমূহ একমাত্র মহান আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে সহীহ্ আক্বীদাহ্ ভিত্তিক আলোকিত মানুষ গড়ার উদ্দেশ্যে এবং একমাত্র মর্যাদাবান, অতি পবিত্র মহান আল্লাহর মর্যাদাশীল ইসলাম ধর্মের দর্পণ ও প্রতিনিধিত্বশীল গোষ্ঠী- মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের মর্যাদাকে সমুন্নত রাখার উদ্দেশ্যে গতানুগতিক মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা ধারার বাইরে সম্পূর্ণ অলাভজনক ও দান-খয়রাত মুক্তভাবে সমগ্র বাংলাদেশের মধ্যে একটি মডেল মাদ্রাসা হিসেবে অত্র প্রতিষ্ঠান নিজস্ব ভবনের স্থায়ী ক্যাম্পাসে ইহার আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করেছে।
সহিহ্ আক্বীদাহ্ কি এবং কেন আমরা তা অনুসরণ করি? পৃথিবী সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকেই ইসলাম হচ্ছে মহান আল্লাহর একমাত্র ধর্ম, যার বিধিবিধান তিনি আদম আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুরু করে বহু নবী ও রাসূলগণের মাধ্যমে মানব জাতির ইহকালীন ও পরকালীন কল্যাণের জন্য প্রেরণ করেছেন। তখনও কিছু মানুষ ইসলাম গ্রহন করেছিল এবং কিছু মানুষ ইসলাম গ্রহন করেনি। যারা ইসলাম গ্রহন করেছিল তারাও আবার সংশ্লিষ্ট নবীর ইন্তেকালের পর কালের বিবর্তনে র্শিক-বিদ্আতে লিপ্ত হয়ে পথভ্রষ্ট হয়ে পড়ে যার বিস্তারিত বিবরণ আমরা পবিত্র কোরআন থেকে জানতে পারি। একই ধারাবাহিকতায় মহান আল্লাহ যখন ইসলামের চুড়ান্ত বিধিবিধান দিয়ে শেষ নবী ও রাসূল হিসেবে আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এঁর উপর পবিত্র কোরআন নাযিল করলেন এবং কোরআনিক বিধিবিধানের জীবন্ত কিংবদন্তি (খরারহম খবমবহফ) হিসেবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আমাদের জন্য একমাত্র অনুকরনীয় আদর্শ হিসাবে নির্দেশনা দিলেন তখনও কিছু মানুষ ইসলাম গ্রহন করেছিল এবং কিছু মানুষ তা প্রত্যাখ্যান করেছিল। যারা ইসলাম গ্রহন করেছিল তারাও আবার নবীর ইন্তেকালের পর কালের বিবর্তনে পূর্বের বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠীর ন্যায় তাদের অধিকাংশই আবার র্শিক ও বিদ্আতে লিপ্ত হয়ে পড়ল এবং মানব রচিত বিভিন্ন ভ্রান্ত মতবাদকে ইসলাম হিসাবে পালন করা শুরু করল। যার ফলশ্রæতিতে মূল ইসলাম থেকে বিচ্যুত হয়ে বিভিন্ন দল মত তৈরি হলো এবং বিভিন্ন সুবিধাবাদি গোষ্ঠী ইসলামকে ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করার প্রয়াস পেল। এতে করে র্শিক, বিদ্আত দুরারোগ্য ব্যাধি ক্যান্সারের মত অধিকাংশ ধর্মপ্রাণ মানুষের ঈমান-আক্বীদাক গ্রাস করে নিল। মহান আল্লাহর কোরআনে এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এঁর হাদিসে এগুলোকে স্পষ্টতই পথভ্রষ্টতা হিসেবে সতর্ক করা হয়েছে। এতদবিষয়ে অসংখ্য কোরআনের আয়াত ও সহিহ হাদিস রয়েছে। উহাদের মধ্য হতে নিন্মে কয়েকটি উল্লেখ করা হল:
‘নিশ্চয় আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেননা, যে তাঁর সাথে কাউকে শরীক করে, এছাড়া যাকে ইচ্ছা তিনি ক্ষমা করেন’ -সূরা নিসা আয়াত-৪৮/১১৬। (একমাত্র আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কেউ বা কোন কিছু গায়েবীভাবে কিছু করতে পারে বলে বিশ^াস করা বা কাউকে আল্লাহর সমকক্ষ দাঁড় করানো বা সেজদা করা হচ্ছে র্শিক)
‘সর্বোত্তম কালাম হল আল্লাহর কিতাব, আর সর্বোত্তম পথ নির্দেশনা হল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- এঁর পথ নির্দেশনা। আর সবচেয়ে নিকৃষ্ট বিষয় হল নতুনভাবে উদ্ভাবিত পন্থা সমূহ- বুখারী ৭২৭৭/২৬৯৭।
‘হে মুমিনগণ তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর এবং রাসূলের আনুগত্য কর এবং নিজেদের কর্ম বিনষ্ট করো না’ -সূরা মুহাম্মাদ আয়াত-৩৩।
‘যে ব্যক্তি দ্বীনের মধ্যে বিদ্আত উদ্ভাবন করবে বা উহাকে আশ্রয় দিবে তার উপর আল্লাহ্, ফেরেশতা এবং সকল মানুষের অভিসম্পাত এবং আল্লাহ্ তার নফল ও ফরয কোন ইবাদত কবুল করেননা’- বুখারী ৩১৭২।
‘প্রত্যেক বিদ্আতই ভ্রষ্টতা আর প্রত্যেক ভ্রষ্টতার পরিনাম জাহান্নাম’- আবু দাউদ ৪৬০৭/ খুযায়মা ১৭৮৫।
অতএব, পবিত্র কোরআন ও সহিহ হাদিস ভিত্তিক সঠিক জ্ঞান অর্জন ও উহার যথাযথ আমল এবং সকল প্রকার র্শিক ও বিদ্আত থেকে মুক্ত থেকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এঁর আদর্শকে অনুসরণ/অনুকরণ করাই হচ্ছে সহিহ্ আক্বীদাহ্।
অত্র প্রতিষ্ঠানের মূল লক্ষ্য হল- সহিহ্ আক্বীদাহ্ ভিত্তিক ইসলামী জ্ঞান এবং পার্থিব জ্ঞানের সমন্বয়ে একজন আদর্শবান ও যোগ্য মানুষ হিসেবে প্রতিটি শিক্ষার্থীকে গড়ে তোলা।
ব্যারিস্টার মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম
প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান
আবূ বকর সিদ্দিক (রাঃ) মডেল মাদরাসা